৭ম শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর ৭ম অধ্যায় জানতে আজকের এই আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত পড়ুন। আশা করি সপ্তম শ্রেণির পরীক্ষার্থীরা অনেক বেশি উপকৃত হবে। যারা ৭ম শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর ৭ম অধ্যায় খুঁজছিলেন তাদের জন্য আজকের এই আর্টিকেলটি।
৭ম শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় সৃজনশীল প্রশ্নঃ ১ (৭ম অধ্যায়)
রিয়া বরিশাল মডেল স্কুলের সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী। তাদের বাড়ি উপকূলীয় অঞ্চলে হওয়ার কারণে প্রায়ই তারা প্রাকৃতিক দুর্যোগের শিকার হচ্ছে। প্রতি বছরই আইলা, সিডরের মতো ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাস দেখা দেয়। এছাড়া নদীভাঙন এলাকায় মাঝে মধ্যে প্রবল আকার ধারণ করে। রিয়ার পক্ষে এসব প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে অনেক সময় স্কুলে ঠিকমতো আসা সম্ভব হয় না।
ক) একটি দেশে কত শতাংশ বনভূমি থাকা দরকার?
খ) মৌসুমি বায়ু বলতে কী বোঝায়?
গ) উদ্দীপকে উল্লিখিত রিয়াদের এলাকায় নদীভাঙনের কারণ তোমার নিজের ভাষায় লেখ।
ঘ) বাংলাদেশে সংঘটিত ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাস জাতীয় জীবনে কোন ধরনের দুর্যোগ বয়ে আনে? ব্যাখ্যা কর।
৭ম শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তরঃ ১ (৭ম অধ্যায়)
ক) একটি দেশের মোট আয়তনের শতকরা প্রায় ২৫ ভাগ বনভূমি থাকা দরকার।
খ) মৌসুমের শুরুতে কোথাও কোথাও কালবৈশাখী ঝড় হয় । সমুদ্র উপকূলে ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসও হয়। বর্ষাকালে বঙ্গোপসাগরের দক্ষিণ দিক থেকে জলীয় বাষ্পপূর্ণ বাতাস বাংলাদেশের উপর দিয়ে বয়ে যায়। একে মৌসুমি বায়ু বলে। এই মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে বাংলাদেশে প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়।
গ) অন্যান্য সব উপকূলীয় এলাকার মতো উদ্দীপকের রিয়াদের এলাকার নদীভাঙন বাংলাদেশে একটি নিয়মিত দুর্যোগ। প্রতিবছর বিশেষ করে বর্ষা মৌসুমে নদী ভাঙন দেখা দেয়।
নদীভাঙনের একটি বড় কারণ হলো বাংলাদেশে নদীগুলোর গতিপথের ধরন। আমাদের দেশের অনেক নদীরই গতিপথ আঁকাবাঁকা। নদীর বাঁকগুলোও ঘন ঘন। ফলে পানির প্রবল তোড় সোজাপথে প্রবাহিত হতে না পেরে নদীর পাড়ে এসে আঘাত করে। যার ফলে নদীর পাড় ভাঙতে থাকে।
এছাড়াও নদীর গতিপথ পরিবর্তন, নদীপাড়ের মাটির দুর্বল গঠন, নদী ভরাট এবং যেখানে সেখানে বাঁধ দিয়ে নদী শাসনের চেষ্টা ও নদী পাড়ে যথেষ্ট গাছ না থাকার কারণেও নদীভাঙনের সৃষ্টি হয়।
ঘ) বাংলাদেশে সংঘটিত ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাস জাতীয় জীবনে মারাত্মক দুর্যোগ বয়ে আনে। এদেশের উপকূলীয় অঞ্চলে এ পর্যন্ত অনেকবার ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাস মারাত্মকভাবে আঘাত হেনেছে।
ফলে অসংখ্য মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে। গবাদি পশু ও ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ১৯৭০ সালের ১২ই নভেম্বরে বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলে ঘটে যাওয়া একটি ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে প্রায় ১০ লক্ষ মানুষের মৃত্যু হয়।
সাম্প্রতিক ঘটে যাওয়া এ রকম দুটি বড় ঘূর্ণিঝড় হলো সিডর ও আইলা। ২০০৭ সালের ১৫ই নভেম্বর ঘটে যাওয়া সিডরে আমাদের দেশের ২৮টি জেলার প্রায় ৩০ লক্ষ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল।
আর ২০০৯ সালের ২০শে এপ্রিল ঘটে যাওয়া আইলায় মানুষ, পশুপাখি, ফসল ও ঘরবাড়ির ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। এছাড়া নানা ধরনের রোগব্যাধি, খাদ্য ঘাটতি ও শিশুদের লেখা-পড়ায় মারত্মক ক্ষতি হয়।
৭ম শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় সৃজনশীল প্রশ্নঃ ২ (৭ম অধ্যায়)
রিফাত রাজধানী আইডিয়াল স্কুলের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র। তার দাদার বাড়ি রংপুর জেলায়। রিফাত যখন রংপুর যায় তখন সে দেখে ঐ জেলায় বেশির ভাগ অঞ্চলে খরা। সে তার দাদার কাছ থেকে খরার কারণ সম্পর্কে জেনে নেয়। সে আরও জানতে পারে বাংলাদেশে খরা ছাড়াও ঘূর্ণিঝড়, বন্যা, জলোচ্ছ্বাস প্রভৃতি প্রাকৃতিক দুর্যোগ ঘটে। এমনকি বাংলাদেশ যে কোনো সময় মারাত্মক ভূমিকম্প ঝুঁকির মধ্যেও রয়েছে।
ক) জলবায়ু পরিবর্তনের মূল কারণ কী?
খ) ঘূর্ণিঝড় বলতে কী বোঝায়?
গ) বাংলাদেশে খরার কারণ ব্যাখ্যা কর।
ঘ) বাংলাদেশ কীভাবে ভূমিকম্প ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে? আলোচনা কর।
৭ম শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তরঃ ২ (৭ম অধ্যায়)
ক) জলবায়ু পরিবর্তনের মূল কারণ গ্রিনহাউস গ্যাস।
খ) কোনো স্থানের বাতাসের চাপ অত্যধিক বৃদ্ধি পেলে সেখানকার বাতাস উপরে উঠে যায়। ফলে ঐ অঞ্চলের বাতাসের চাপ কমে যায়, একে নিম্নচাপ সৃষ্টি হওয়া বলে। তখন আশেপাশের অঞ্চল থেকে শীতল বাতাস প্রবল বেগে ঐ নিম্নচাপ অঞ্চলের দিকে ছুটে আসে। একেই বলে সাইক্লোন বা ঘূর্ণিঝড়। এদেশের অধিকাংশ ঘূর্ণিঝড় হয় বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের কারণে।
গ) খরা বাংলাদেশের একটি অন্যতম প্রাকৃতিক দুর্যোগ। প্রয়োজনীয় বৃষ্টিপাতের অভাবে খরা হয়। প্রায় প্রতি বছর বসন্তের শেষ ও গ্রীষ্মের শুরুতে আমাদের দেশের উত্তরাঞ্চলে খরা দেখা দেয়। পানির অভাবে জমির সেচকাজ ব্যাহত হয়, ফসল নষ্ট হয়। বৃষ্টিপাতের অভাব ছাড়াও বিভিন্ন নদীর উজানে বাঁধ নির্মাণ, পরিবেশ দূষণ ইত্যাদি কারণেও খরা হয়।
ঘ) বাংলাদেশের একটি উল্লেখযোগ্য প্রাকৃতিক দুর্যোগ ভূমিকম্প৷ পৃথিবীতে যত রকমের প্রাকৃতিক দুর্যোগ দেখা দেয় সেগুলোর মধ্যে ভূমিকম্পই সবচেয়ে অল্পসময়ে অধিক ধ্বংসযজ্ঞ ঘটায়।
ভূমিকম্পের ব্যাপারে কোন আগাম সতর্ক সংকেত দেয়া সম্ভব নয়। মানুষ কিছু বোঝে ওঠার আগেই একটি বা কয়েকটি ঝাঁকুনিতে পুরো এলাকাকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করে দিতে পারে। একই অঞ্চলে সাধারণত পরপর ককেবার বড়, মাঝারি ও মৃদু ধরনের ভূমিকম্প হতে পারে।
পৃথিবীর অন্যান্য দেশ, যেমন- ইরান, চীন, মেক্সিকো, চিলি ও জাপানের মতো আমাদের দেশও ভূমিকম্প ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। বাংলাদেশে বিশেষ করে সিলেট, ময়মনসিংহ, ঢাকা, দিনাজপুর, বগুড়া, টাংগাইল, চট্টগ্রাম অঞ্চলে ভূমিকম্পের ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি।
চট্টগ্রাম ও সিলেট অঞ্চলে ইদানীং প্রায়ই মৃদু ভূমিকম্প হচ্ছে। ২০১১ সালের ১৮ সেপ্টেম্বরে সংঘটিত ভূমিম্পটি ছিল বেশ শক্তিশালী। এ ভূমিকম্পে সারা বাংলাদেশ কেঁপে ওঠে ছিল।
উপসংহার
আশা করি, যারা ৭ম শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর ৭ম অধ্যায় খুঁজছিলেন তারা অনেক বেশি উপকৃত হয়েছেন। ৭ম শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর ৭ম অধ্যায়ের মত আরো অন্যান্য অধ্যায়ের সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর পেতে আমাদের ওয়েবসাইটে নিয়মিত ভিজিট করুন। ধন্যবাদ আজকের ৭ম শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় সৃজনশীল প্রশ্ন নিয়ে লেখা আর্টিকেলটি একদম শেষ পর্যন্ত পড়ার জন্য।
0 Comments